আমার জীবনের কিছু কথা।কাজ শেখা ও কাজের সফলতা

কাজ শেখা ও কাজের সফলতা
 সেলাই কাজ। 
আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার কর্ম জীবন ও কর্ম জীবনের শুরুটা এবং সফলতা।

 ছোট থেকে একটু বোকা টাইপের  ছিলাম। পড়াশুনায় ভালো ছিলাম না। খেলাধুলা তেমন ভালো পাড়তাম না।সংসারের বড় ছেলে ছিলাম এবং সংসারে খুব অভাব ছিল। প্রাইমারি সমাপনী পরিক্ষা দেওয়ার পরে আব্বু বল্ল ঢাকায় যাও তোমার চাচার কাছে গিয়ে এবং তোমার চাচার বন্ধুর একটা টেলার্সের দোকান আছে ঐ খানে গিয়ে দর্জি কাজটা শিখো।শেখার পরে আবার গ্রামে চলে এসো।

আমি আর কোন কিছু বল্লাম না।আব্বুর কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল।সমাপনী পরিক্ষা দেওয়ার এক মাস পরে ঢাকায় আসলাম আমার চাচীর সাথে।ঢাকায় আসতে আসতে রাত হয়ে গেল।তারপর রাতে চাচার বাসায় খাওয়া দাওয়া করে গুমিয়ে গেলাম। সকালে গুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা করলাম।নাস্তা করার পরে আমার চাচা বল্ল চল তুমাকে দোকানে দিয়ে আসি।আমাকে দোকানে দিয়ে আসলো।দোকানে আসার পরে দোকানের মাহাজন আমাকে নাম ও কতটুকু পড়া শুনা করেছি এবং এক থেকে দের বছর লাগবে কাজ শিখতে এতো  দিন থাকতে পারবো কিনা জিঙ্গাসা করল।আমি সব কিছু বল্লাম এবং বল্লাম পারবো।

তারপর একটা ব্লাউজ অন্ন এক জনের হাতে  দরিয়ে দিয়ে বল্ল এইটা হাতের কাজ কর এবং কিভাবে হাতের কাজ করতে হয় ওকে দেখাও।তরপর দেখলাম কিভাবে হাতের কাজ করতে হয়।এভাবে তিন চার মাস হাতের কাজ দেখলাম এবং হাতের কাজ শিখলাম ব্লাউজের,কিভাবে কামিজের গলা হাতের কাজ করতে হয় কিভাবে বোতাম লাগাতে হয় আরও অনেক কিছু।
তিন চার মাস হাতের কাজ শিখার পরে একদিন মহাজন ডাকদিয়ে বল্ল সালোয়ার সেলাই করতে পারবা।

আমি সাহস করে বলে ফেল্লাম পারবো তারপর আমাকে একটা সালোয়ার দিয়ে বল্ল এইটা সেলাই কর।আশেপাশের কারিগর দেরকে জিঙ্গাসা করে করে অনেক কষ্ট করে দুই তিন ঘন্টায় সালোয়ারটা সেলাই করলাম।সেলাই করে দোকানের মাস্টারকে দেকালাম সব কিছু ঠিক আছে কিনা।বল্ল টিক আছে।তারপর থেকে প্রতিদিন 3-4 টা করে সালোয়ার সেলাই করি ও পাশাপাশি টুকটাক দোকানের অলটার কাজ করি।2-3 মাস শুধু সালোয়ার সেলাই করার পরে একদিন একটা কামিজ দিয়ে বল্ল আমার মেসিনের পাশের কারিগরদেরকে দেখিয়ে দেখিয়ে সেলাই করতে।


পাশের কারিগরদেরকে দেখিয়ে দেখিয়ে সেলাই করলাম সেলাই করে দোকানের মাস্টারকে দেখালাম সবকিছু টিক আছে কিনা।সব কিছু চেক করে বল্ল গলাটা ও কামিজের সাডটা ভালো হয়নি।তার পর থেকে সালোয়ার কামিজ ও লেডিস কাজের মুটামুঠি সব কিছুই সেলাই।না পারলে আশেপাশের কারিগর ও মাস্টারকে দেখিয়ে দেখিয়ে সেলাই করতাম।এভাবে হাতের কাজ থেকে শুরু করে 14 মাস কাজ করার পরে আমি যখন সবকিছু মুটামুঠি পারি তখন আমাকে একদিন মহাজন ডাক দিয়ে বল্ল তুমি কারিগরি বা ফডাকশানে কাজ করবে সামনের সাপ্তাহ থেকে।

আমিতো শুনে মহাখুশি। এবং পরের সপ্তাহ থেকে ফডাকশানে কাজ শুরু করলাম।প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হয়েছিল নতুন হওয়ার কারণে ডিজাইন কাজ তেমন বুঝতাম না এবং কাজের ফিনিসিং ভালো হত না।কিন্তু বেশ কিছু দিন কাজ করার পরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে গেছে।এবং আমার আগে পরে অনেকেই কাজ শিখতে এসেছে।কেউ কেউ 2-3 মাস কাজ করে চলে গেছে তাই কাজ শিখতে পারেনি।আবার অনেকে কাজ শিখতে এসে 2-3 দিন কাজ করে বলে এখানে থাকতে ভালো লাগে না কাজ করতে ভালো লাগে না তাই তারা চলে গেছে।আমিও যদি তাদের মত এই রকম করতাম তাহলে হয়তো আমারও মনে হয় তাদের মত কাজ না শিখে বাড়ীতে চলে যেতে হত।জীবনে কষ্ট করেছি বলেই ভালো একটা কারিগর
হতে পেরেছি এবং কারিগর থেকে মাস্টার হয়েছি।

সামনে আরও ভালো কিছু করব দোকান দিবো বা নিজের ব্যবসা শুরু করব।
Next Post Previous Post
1 Comments
  • Educational Info
    Educational Info December 30, 2022 at 6:06 AM

    সফলতার কথাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো

Add Comment
comment url